আক্কাসদের ফাঁসি চান সাগরের মা
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় কিশোর সাগরকে (১৬) পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি আক্কাস আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। আক্কাসসহ অন্য আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন নিহত সাগরের মা।
আজ শুক্রবার ভোরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শম্ভুপুর রেল এলাকা থেকে আক্কাস আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কিশোর সাগরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান র্যাব ১৪-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শরীফুল ইসলাম।
আজ বেলা সাড়ে ৩টায় ময়মনসিংহে র্যাব ১৪-এর কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে শরীফুল ইসলাম বলেন, সাগর হত্যার খবর মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর র্যাব সদস্যরা জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন। আজ ভোরে প্রধান আসামি আক্কাস আলীকে ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামিদেরও ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব ১৪-এর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নিহত সাগরের বাবা শিপন মিয়া বলেন, তাঁর ছেলে চোর নয়। সে ভাঙারি ব্যবসা করত। তাকে সন্দেহজনকভাবে ধরে হত্যা করা হয়েছে।
কিশোর সাগর হত্যা মামলার প্রধান আসামি আক্কাস আলী (মধ্যে)। ছবি : এনটিভি
সাগরের মা হাসি বেগম ছেলে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন। আক্কাস আলীকে গ্রেপ্তার করায় তিনি র্যাব সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাকি আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক। এরপর দ্রুত বিচার শুরু করে আক্কাস আলীসহ সব আসামিকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হোক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভাঙারি ব্যবসায়ী কিশোর সাগর ময়মনসিংহ রেলবস্তিতে থাকত। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার ভোরে তাকে চোর সন্দেহে আটক করেন গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চরশ্রীরামপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী আক্কাস আলী ও তাঁর ভাইয়েরা। পরে তাঁরা মাছের খামারের খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে লাঠিসোটা ও গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। এতে সাগর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর চিকিৎসার কথা বলে সাগরের মরদেহ অটোতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান আক্কাস ও তাঁর ভাইয়েরা। রাতে লাশ আক্কাস আলীর মাছের খামারের পাশের ছনক্ষেতে গুম করে রাখেন। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে লাশ উদ্ধার করে ছনক্ষেত থেকে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় ওই দিন দুপুরে সাগরের বাবা শিপন মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো পাঁচজনকে আসামি করে গৌরীপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় আসামি করা হয় আক্কাস আলী, তাঁর ভাই হাসু, সাত্তার, জুয়েল ও সোহেল এবং কর্মচারী কাইয়ুমকে।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গৌরীপুর থানার পুলিশ উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার রিয়াজ উদ্দিন (৩০) ও ফজলুর রহমানকে (৪০) গ্রেপ্তার করে। এরপর আজ ভোরে প্রধান আসামি আক্কাস আলীকে ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।