বিয়ের তিন মাস পর লাশ হলো কিশোরী আশুরা
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছিল মেয়েটি। বাবা-মায়ের ইচ্ছা হলো বিয়ে দেওয়ার। তাঁদের সে ইচ্ছা পূরণও হলো। কিন্তু তিন মাস না যেতেই শ্বশুরবাড়ির ঘরের আড়ায় নিজের শাড়িতে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেল মেয়েটির।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের কোড়া গ্রামে। দেবহাটা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত কিশোরী গৃহবধূ হলো আশুরা খাতুন (১৩)।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জামির আলী জানান, আশুরা কোড়া গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে। সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছিল ঈদগাহ আমিনা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছার কাছে অসহায় হয়ে পড়ে মেয়েটি। তাঁরা বাধাও দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও ওর বাবা ওকে চোখের আড়ালে রেখে তিন মাস আগে বিয়ে দেন একই এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে ইউনুস আলীর সঙ্গে।
ইউপি সদদস্য জানান, বিয়ের পর থেমে যায় চঞ্চল মেয়েটির লেখাপড়া। ওইটুকু বয়সে তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়। এতে সে খানিকটা শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।
জামির আলী আরো জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্বামী ইউনুস আশুরাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছিলেন। পরদিন আশুরাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি। আজ সকালে আশুরাকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির ঘরের আড়ায় নিজের শাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী কামাল হোসেন জানান, ময়নাতদন্তের জন্য আশুরার লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ইউপি সদস্য জামির আলী আরো জানান, শ্বশুরবাড়ি গিয়ে আশুরা জানতে পারে তার স্বামী ইউনুস কিছুদিন আগে কালীগঞ্জে বিয়ে করেছিল। মাত্র ১৫ দিনের মাথায় সে বিয়ে ভেঙে যায়। তিনি জানান, এর পর থেকে আশুরা অশান্তিতে ছিল বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তার ওপর তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি খেলার সাথীদের হারিয়ে সে মানসিক আঘাত পায়।