নারীকে মাতৃজ্ঞানে রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারীপূজা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী তিথিতে সাড়ম্বরে পালিত হলো ‘কুমারীপূজা’। প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া মহাষ্টমী তিথি উপলক্ষে মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদ বিতরণ ও আরতি নিবেদন করেছেন পূজারিরা।
কুমারীপূজাকে মাতৃজ্ঞানে ঈশ্বরের আরাধনা বলে মনে করেন হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে চলে শ্রদ্ধা নিবেদন। দুর্গাপূজার অষ্টমীতে রামকৃষ্ণ মিশনগুলোতে পালিত হয় এই পূজা।
এবারের কুমারীপূজায় রামকৃষ্ণ মিশনে আসা এক ভক্ত বলেন, ‘কুমারী শক্তির যে কী প্রভাব, তা হয়তো মায়ের (দেবী দূর্গার) যে কুমারী রূপ সেটা না দেখলে কেউ বলতে পারবে না। আর মায়ের তো অনেক রূপ, এসব রূপের মধ্যে কুমারী রূপটিই হচ্ছে অনেক বেশি আদরণীয়।’
কুমারী পূজা দেখতে আসা আরেক ভক্ত বলেন, ‘আজ আমি কুমারী পূজা করতে এসেছি নারীশক্তির সম্মানের বিষয়টিকে আবার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। যাতে আমাদের নারীরা আরো এগিয়ে যেতে পারেন।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনির মধ্যে দিয়ে মঞ্চে অধিষ্ঠিত করা হয় কুমারীকে। এক থেকে ১৬ বছরের সুলক্ষণা অবিবাহিত ব্রাহ্মণ বা অন্য গোত্রের কন্যাকে কুমারী বানিয়ে, নতুন নামকরণ করে পূজা করা হয়। এবারে সাত বছরের রূপকথা চক্রবর্তীকে শাস্ত্রীয়মতে মালিনী নামকরণ করে দেবীজ্ঞানে পূজা করেছেন পূজারিরা।
কুমারী পূজার বিষয়ে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কুমারী পূজার উদ্দেশ্য প্রত্যেক স্ত্রী, প্রত্যেক মহিলা মা দূর্গার অংশ। আমাদের শাস্ত্রেও তাই বলা হয়। প্রত্যেক স্ত্রী শক্তির অংশ বা শক্তিরূপিণী। চণ্ডীতে (ধর্মগ্রন্থবিশেষ) সেই কথাই বলা হয়েছে। সেজন্যই দুর্গাপূজার মাঝে একদিন আমরা দুর্গারই একটি প্রতিমূর্তি সুলক্ষণাযুক্তা কোনো ব্রাহ্মণ কন্যাকে মা দুর্গার প্রতিরূপ হিসেবে পূজা করি।’
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ আরো জানান, কুমারীপূজার পর একইদিনে, অষ্টমীতিথিতে পূজা আর সন্ধিপূজার মাধ্যমে দুর্গার কাছে দুর্যোগমুক্তির প্রার্থনা করেন ভক্তরা।