নির্বাচনে রোহিঙ্গা ইস্যুকে কাজে লাগাতে চায় আ. লীগ : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রোহিঙ্গা ইস্যুকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। অথচ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এই মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এখন রোহিঙ্গা ইস্যুটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গাদের এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কূটনৈতিক উপায়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কোনো উদ্যোগ গ্রহণে তৎপর নয় সরকার। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ফেরা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। এটা সরকারের চরম ব্যর্থতা।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবরা জাতীয় ঐক্য চাইবেন না। কারণ তাঁরা রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চান না। রোহিঙ্গা নিয়ে রাজনীতি করে তাঁরা আরো বেশ কিছুটা সময় ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় কি না, সেই অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, দেশের রাজনীতি, বিরোধী দল ও দলের নেতা-নেত্রীসহ নানা বিষয়ে অলিক, মনগড়া, ভিত্তিহীন কাব্যকাহিনী রচনা করে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছেন সুবীর ভৌমিক নামের একজন বিদেশি সাংবাদিক। এই অপপ্রচার ও মিডিয়া সন্ত্রাস চালাতে ওই বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে দেশীয় কিছু সাংবাদিকও জড়িত।’
সাংবাদিকদের সমালোচনা করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত মিজ্জিমা ইংলিশ সাপ্তাহিকে খুবই চাঞ্চল্যকর খবর প্রচার করেছে। সেটি হলো, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবননাশের আরেকটি অপচেষ্টা। বিষয়টি অসত্য বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ইতিমধ্যে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগেও তিনি লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছেন বলে গালগল্প প্রচার করেছেন।’
দিনে দিনে দেশের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নেই। ব্যাংকে সুদের হার কমতে কমতে একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। ব্যাংকে টাকা রাখলে এখন নামমাত্র সুদ মেলে। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এই সুদহার কিছুই নয়। এ জন্য অনেকেই এখন টাকা ব্যাংকে রাখছে না। ফলে আগের মতো বাড়ছে না আমানত।’
‘এর চেয়েও উদ্বেগজনক খবর হলো, কম সুদেও ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ আমানত পাচ্ছে, সেটাও ঋণ হিসেবে বিতরণ করতে পারছে না। নতুন করে বিনিয়োগ চাহিদা না থাকায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ একেবারেই কম। রপ্তানি আয়ও দিন দিন কমে যাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।