আসামি রুবির ভিডিও আদালতে উপস্থাপন হবে কাল
চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহ হত্যা মামলায় আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবির বক্তব্যসহ ভিডিওটি প্রমাণ হিসেবে আগামীকাল সোমবার আদালতে দাখিল করবেন আইনজীবীরা।
আজ রোববার সালমান শাহ হত্যা মামলার প্রধান আইনজীবী ফারুখ আহম্মেদ এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফারুখ জানান, মামলার আসামি রুবি যেহেতু হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তা আদালতের নজরে আনতে ভিডিও কাল দাখিল করা হবে।
আইনজীবী বলেন, ‘এটি ২১ বছর আগের হত্যা মামলা এবং পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তা বর্তমানে তদন্ত করছেন। তদন্ত সংস্থা যেন খুব দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেয় তা আমরা শুনানিতে বলব।’ তিনি বলেন, এ ছাড়া মামলার আসামিরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে ধরনের নির্দেশনা আদালতের কাছে চাওয়া হবে।
এর আগে সালমান শাহ্ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে আসেন। তাতে তিনি বলেন যে, সালমান শাহ ওরফে ইমন আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এতে তিনি নিজে যুক্ত না থাকলেও তাঁর স্বামী জ্যানলিন চ্যান, ছোট ভাই রুমী, সালমান শাহর স্ত্রী সামিরাসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। এমনকি বিষয়টি জানার কারণে তাঁর নিজের জীবনও এখন হুমকির মুখে বলে সেখানে উল্লেখ করেন রুবি। বলেন, তিনি বর্তমানে পালিয়ে রয়েছেন।
এই ভিডিও প্রকাশের পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বা ভাইরাল হয়ে যায়। সালমান শাহর ভক্তরা ভিডিওটি শেয়ার করে হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচারও দাবি করছেন।
সালমান শাহ হত্যা মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ নিহত হন। সে সময় তাঁর বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন।
১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানের বাবা তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিএমএম আদালত অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগটি একসঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন।
পরবর্তী সময়ে একই বছরের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করে সিআইডি। একই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালত সিআইডি পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।
সিআইডির দাখিল করা প্রতিবেদনে সালমানের বাবা সন্তুষ্ট না হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন।
ওই রিভিশন মামলার ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটিকে ফের বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এরপর প্রায় ১২ বছর ধরে এ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট সি এম এম বিকাশ কুমার সাহার কাছে মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।