রাজধানীর চানখাঁরপুলে বনফুল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিককে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় বাধা দিতে গেলে দোকানের ম্যানেজারকেও মারধর করা হয়।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাবির পার্শ্ববর্তী চানখাঁরপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চাঁদা না দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব হোসেন, ঢাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মাসুদসহ কয়েকজন নেতাকর্মী ওই দুজনকে নির্যাতন ও মারধর করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাবির ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মাসুদ। তিনি সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে এখনো তিনি ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে থাকেন।

বনফুল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের একজন কর্মচারী ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাতে বনফুলে মিষ্টি খেতে যান রাকিব হোসেন ও মাসুদ। মিষ্টি খাওয়ার পর তাঁরা ওই দোকানের মধ্যে সিগারেট ধরিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দোকানের মধ্যে এসি থাকায় তাঁদের সিগারেট ধরাতে নিষেধ করেন দোকানের মালিক আল আমিন। এ সময় তাঁদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আল আমিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেন তাঁরা। খবর পেয়ে ক্যাম্পাস থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক উপসম্পাদক আরিফুল ইসলাম জিসানসহ আরো কয়েকজন নেতাকর্মী দোকানে যান। আল আমিনকে রক্ষা করতে এলে দোকানের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিনকেও মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।  

বনফুল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের এক কর্মচারী জানান, ছাত্রলীগের নেতা রাকিব হোসেন ও জবি শিক্ষক মাসুদ দোকানের ম্যানেজারের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে তিনি ১৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। এ সময় ছাত্রলীগের এক নেতা জোর গলায় বলেন, ‘আমরা ফকির নাকি যে আমাদের ১৫ হাজার দিবি?’ এ কথা বলে ম্যানেজারকে ফের মারতে থাকে নেতাকর্মীরা। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়।

এ অভিযোগের বিষয়ে রাকিব হাসান ও মাসুদের মুঠোফোনে কল করা হয়ে নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যভাবেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, ‘আমি ঘটনাটি জানি না। তবে খোঁজ নেব। যদি কেউ এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া  হবে।’

জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে ঘটনাটি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক একটি ব্যাপার। এ বিষয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা ঘটনাটির সত্যতা জানিয়ে ব্যবস্থা নেবে।’