ডেমরা জোনের পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১৬ নভেম্বর
চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পুলিশের ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতেখারুল ইসলামসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ১৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম রায়হান উল ইসলাম এ আদেশ দেন।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়ে বলেন, আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু পুলিশের ওয়ারী জোনের উপকমিশনার (ডিসি) আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় নতুন দিন ধার্য করেন বিচারক।
এর আগে গত ১২ জুলাই শাহনা আক্তার নামের এক নারী মামলাটি দায়ের করেন। তখন পুলিশ মামলাটি শুনে ওয়ারী জোনের উপকমিশনারকে (ডিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলায় অপর আসামিরা হলেন—যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-প্রশাসন) আনিসুর রহমান, ওসি (তদন্ত) তোফায়েল আহমেদ, উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন, ওমর ফারুক, কবির হোসেন উকিল, শাহীন পারভেজ, লক্ষ্মীকান্ত রায়, শহীদুল্লাহ, কে এম এনায়েত হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আতোয়ার রহমান, কনস্টেবল সাইফুল, পুলিশের সোর্স খোকন ও সুমন।
বাদীর আরজি থেকে জানা যায়, তাঁর স্বামী ফরমান উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশায় ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন। ফরমান উল্লাহ যাত্রাবাড়ী থানার কিছু পুলিশ সদস্যকে মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নিরীহ মানুষদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতে দেখতে পান।
তিনি ৫ মে, ৮ জুন ও ১৬ জুন ডাকযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে পৃথক তিনটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে অবগত হয়ে অভিযুক্তরা তাঁকে ফোন করে থানায় ডেকে নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলেন। অভিযোগ তুলে না নিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময়ে গত ২১ জুন শাহনা আক্তার তাঁর স্বামীর সঙ্গে ওয়ারী থানাধীন রাজধানী সুপারমার্কেটে যান। এ সময় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তাঁদের একজন ফরমান উল্লাহকে সালাহউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালে ডেকে নেন। দীর্ঘ সময় ফরমান উল্লাহ ফিরে না আসায় শাহনা আক্তারও সেখানে যান। এ সময় তিনি দেখতে পান যে আসামিরা ফরমান উল্লাহকে টেনেহিঁচড়ে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে যাচ্ছেন।
পরে শাহনা আক্তার পুলিশের ওয়ারী জোনের ডিসি ফরিদকে বিষয়টি জানান। ডিসি ফরিদ এসি ইফতেখারুল ইসলামকে ফোন করে ফরমান উল্লাহকে ছেড়ে দিতে বলেন এবং শাহনা আক্তারকে থানায় গিয়ে তাঁর স্বামীকে নিয়ে আসতে বলেন।
শাহনা আক্তার থানায় গেলে এসি ইফতেখারুল ইসলাম ডিসি ফরিদকে গালিগালাজ করেন এবং নিজেকে নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমানের মেয়ের জামাই পরিচয় দিয়ে শাহনা আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন, থাপ্পড় মারেন ও ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।
শাহনা আক্তার তাঁর স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। এর পর ইফতেখারুল ইসলাম তাঁর স্বামীকে ছেড়ে দিতে ছয় লাখ টাকা দাবি করেন। শাহনা আক্তার তাঁদের দুই লাখ টাকা দেন।