রোহিঙ্গা ইস্যুতে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা চাইলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান গণহত্যা বন্ধের লক্ষ্যে সেদেশের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা চাইলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত অ্যান সিওং দো সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি এই আহ্বান জানান।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাংলাদেশ মানবতার স্বার্থে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে খাদ্য ও চিকিৎসাসহ অন্যান্য সাহায্য দিচ্ছে। কিন্তু সীমিত সম্পদের দেশে এই লাখ লাখ শরণার্থীকে অব্যাহতভাবে সাহায্য যোগান দেওয়া কঠিন। আগের শরণার্থীর সঙ্গে আরো প্রায় পাঁচ লাখ নতুন রোহিঙ্গা যোগ হয়েছে যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি। এদের মধ্যে কয়েক হাজার সন্তানসম্ভবা নারীও আছে। তাঁদের খাদ্য, আশ্রয়কেন্দ্র যোগানসহ চিকিৎসা সহায়তা দিতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে সেখানে মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৫০ থেকে একশতে উন্নীত করা হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে। ওই অঞ্চলের ৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিকেরও সংস্কার করা হচ্ছে শরণার্থীদের চাপ সামলাতে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা বিতাড়িত করার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা নিন্দনীয় এবং অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে। এজন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর তাগিদ দেন মোহাম্মদ নাসিম।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত এ সময় বলেন, মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গা বিতারণের নামে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ ও নিরীহ মানুষকে যেভাবে নির্বিচারে মারছে তা মোটেও কাম্য নয়। তাঁরা তাদের নিজেদের জনগণকেই মারছে যার মধ্যে মুসলিম, বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীও আছে। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশকে শরণার্থীর চাপ বহন করতে হচ্ছে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক গুণাবলী ও সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গী যারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। শরণার্থীদের সাহায্যে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্য সারা বিশ্বকেও সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়া শরণার্থীদের সাহায্যার্থে নগদ সহায়তা প্রদান করবে বলেও তিনি জানান।
পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজধানীর কমলাপুরে রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার উপযোগী করতে করণীয় নির্ধারনে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনসহ স্বাস্থ্য ও রেল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।