টেলিফোন অপারেটর পদে চাকরি পেলেন সিদ্দিকুর
রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময়ে কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে চোখ হারানো শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে টেলিফোন অপারেটর পদে সিদ্দিকুর নিয়োগ পেয়েছেন। আগামী ১ অক্টোবর তিনি কর্মস্থলে যোগ দেবেন।
আজ বুধবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সিদ্দিকুরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে চোখ হারানোর কারণে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানকে সরকারি চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।
নিয়োগপত্র অনুযায়ী সিদ্দিকুর রহমানকে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানির টেলিফোন অপারেটর পদে এক বছরের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাঁর বেতন ধরা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। সঙ্গে আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন তিনি। তবে এক বছর পর চাকরি স্থায়ী হলে তাঁর বেতন হবে ২৩ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এ ঘটনাটি অনেক কষ্টের ও বেদনাদায়ক। তবে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি দিতে পারাটা স্বস্তিদায়ক। সিদ্দিকুরের প্রতি সরকারের নজর থাকবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চোখ রক্ষা করতে সিদ্দিকুরের প্রত্যাশা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেটা সফল হয়নি। তবে তিনি এক চোখে ঝাপসা দেখতে পান। সে ক্ষেত্রে চাকরির পাশাপাশি তিনি পড়াশোনাও চালিয়ে যাবেন।
অনুষ্ঠানে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এখন সে চিন্তা করে লাভ নেই। আমি এখন আগের অবস্থানে নেই। তারপরও স্বপ্ন বাস্তবায়নে চেষ্টা চালিয়ে যাব। দেখা যাক, কতদূর কী করা যায়।’ তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এ সময় সিদ্দিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সাংবাদিক, শিক্ষক ও বন্ধুদের ধন্যবাদ জানান এবং তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নিয়োগপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির জগলুল প্রমুখ।
পরীক্ষার রুটিন ও তারিখ ঘোষণাসহ কয়েকটি দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলে চোখে গুরুতর আঘাত হন তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। পরে তাঁকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর ডান চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা নেই এবং বাম চোখের অবস্থাও ভালো না বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের তত্ত্বাবধানে সিদ্দিকুরকে ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করেও সিদ্দিকুরের চোখে আলো ফেরেনি।