পাঁচ দিন ধরে বাড়ির আঙিনায় প্রবাসীর মরদেহ!
মুসলিম নিয়ম অনুযায়ী লাশের শেষ গোসল হয়েছে, খোঁড়া হয়েছে কবর। তার পরও টানা পাঁচ দিন মরদেহ পড়ে আছে বাড়ির আঙিনায়। পাশে স্বজনরা বসে আছেন; কিন্তু লাশ দাফন করতে পারছেন না।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার টিঘর গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, টিঘর গ্রামের সেলিম মিয়া নয় বছর ধরে মালয়েশিয়ায় ছিলেন। সম্প্রতি তিনি মারা গেলে এক প্রতিবেশীর সহায়তায় লাশ দেশে আনা হয়। লাশ আনতে তিন লাখ টাকা খরচ হয়। সেই খরচ মেটাতে না পারায় লাশ দাফন করতে না দেওয়ার অভিযোগ করেন তাঁরা।
লাশ দাফনের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এলাকায় মিছিল করেছেন স্থানীয়রা। রাতে পুলিশ টিঘর গ্রামে সেলিম মিয়ার বাড়িতে যায়। পরে সবাইকে নিয়ে আজ বিকেলের মধ্যে লাশ দাফন করার নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন টিঘর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রইস মিয়া।
সেলিম মিয়ার স্ত্রী সালেহা বেগম জানান, তাঁদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁর স্বামী নয় বছর ধরে মালয়েশিয়ায় ছিলেন। গত ৩১ আগস্ট তিনি সেখানে মারা যান। ৮ সেপ্টেম্বর তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আসে। স্বজনরা লাশ দাফনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
এ সময় মালয়েশিয়া থেকে প্রতিবেশী করম আলী ফোন করে জানান, মরদেহ দেশে পাঠাতে তাঁর তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে টাকা পরিশোধের পর মরদেহ দাফন করতে বলেন।
আর এতেই বিপাকে পড়ে সেলিমের পরিবার। তাঁরা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় লাশ দাফন করা যায়নি। বাড়ির আঙিনায় মরদেহ নিয়ে বসে আছেন। এর মধ্যে মরদেহের বিভিন্ন অংশে পচন ধরতে শুরু করেছে।
প্রবাসী করম আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম জানান, লাশের পরিবহন খরচ বাবদ তাঁর স্বামী তিন লাখ টাকা দিয়েছেন। তিনি টাকা চেয়েছেন। কিন্তু লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আগে পুলিশকে জানানো হয়নি। গতকাল পুলিশ গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছে। আজ লাশ দাফন হবে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে মামলা হবে।
পরিবহন খরচ দিতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার টিঘর গ্রামে প্রবাসী সেলিম মিয়ার লাশ পাঁচ দিন ধরে এভাবেই পড়ে আছে।