ছাত্রীকে নিয়ে মাদ্রাসাশিক্ষক উধাও, দুই বউকে তালাক
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চণ্ডীগড় ইউনিয়নে এক মাদ্রাসাশিক্ষক (৪৫) তাঁর এক ছাত্রীকে (১৮) বাসা থেকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছেন। এরপর তিনি তাঁর আগের দুই স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।
শিক্ষকের এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং তাঁর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষকের নাম ওমর ফারুক (৪৫)। বাড়ি চণ্ডীগড় ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামে। সংসারে তাঁর দুই স্ত্রী। পেশায় চণ্ডীগড় ইউনিয়নের একটি আলিম মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের শিক্ষক। ওই ছাত্রী আলিম দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। বাড়ি আলমপুরের পাশের গ্রামে। তিনি ওমর ফারুকের বাসায় গিয়ে মাঝেমধ্যে প্রাইভেট পড়তেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৭ আগস্ট থেকে ওই ছাত্রী নিখোঁজ হন। তাঁকে কোথাও না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা কয়েকদিন পর দুর্গাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির বিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রী শিক্ষক ওমর ফারুককে নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দের কাছে হাজির হন।
ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ এনটিভি অনলাইনকে জানান, ওই ছাত্রী একদিন মাদ্রাসাশিক্ষক ওমর ফারুককে নিয়ে এসে জানান, তাঁরা স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। বিয়ের আগে ওমর ফারুক তাঁর আগের দুই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন।
এরপর এই ঘটনা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
শোকে দুঃখে হৃদরোগে আক্রান্ত হন ছাত্রীর বাবা। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর এই ঘটনায় আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী। ওই শিক্ষকের বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে এলাকাবাসী। প্রায় প্রতিদিনই মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় ওই শিক্ষককে। সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় তালা লাগিয়ে দেয় এলাকাবাসী।
যোগাযোগ করা হলে ওই মাদ্রাসার জমিদাতা হাজি আবদুল মোতালেব এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শিক্ষক ওমর ফারুকের ঘটনায় আমরা খুব লজ্জিত। আমরা তাঁর কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে তাঁকে মাদ্রাসা থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানাই।’
আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা ও যুব নেতা আবদুল হান্নান বলেন, ‘মাদ্রাসাশিক্ষক ওমর ফারুক তাঁর আগের দুই বউকে তালাক দিয়ে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলে শুনেছি।’
দুর্গাপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, ছাত্রীকে নিয়ে ভাগিয়ে বিয়ে করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর একটি সুরাহার চেষ্টা চলছে।