‘অনুমতি’ না নেওয়ায় বিএনপির ত্রাণ বিতরণে লাঠিপেটা
‘অনুমতি না নেওয়ায়’ শরীয়তপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে পারেনি বিএনপি। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, বিষয়টি আগেই পুলিশকে জানানো হয়েছে।
পুলিশের লাঠিপেটায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে বিএনপি অভিযোগ করেছে। আজ সোমবার শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে এসব ঘটনা ঘটে।
সখিপুর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরোয়ার মোল্লা জানান, সোমবার সকাল ১০টায় সখিপুরের উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নদীভাঙন ও বন্যাকবলিতদের মধ্যে অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। এ উপলক্ষে গতকাল রোববার চেয়ারম্যান বাজারের আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি একটি প্যান্ডেল তৈরি করে। পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রোববার রাতে প্যান্ডেলটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। আজ সকাল থেকেই জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ওই এলাকায় জড়ো হতে শুরু করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহড়া দিতে থাকে। এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে ত্রাণ বিতরণস্থলে যেতে চাইলে তাদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে নড়িয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর রাঢ়ী, ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক রাতুল, সখিপুর থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মানিক বকাউল, চরসেন্সাস ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মমিন দিদার ও দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদিরসহ ১০ নেতাকর্মী আহত হন।
শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন কালু বলেন, ‘আমাদের পূর্বনির্ধারিত ত্রাণ বিতরণের তারিখ ছিল। আজ সকালে আমরা উত্তর তারাবুনিয়ায় রওনা দিলে সখিপুর বাজারে পুলিশ আমাদের বাধা দেয় এবং নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিপেটা করে। এ কারণে আমরা ত্রাণ বিতরণ করতে পারিনি।’
জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, ‘আমি পদ্মার ভাঙন ও বন্যায় সখিপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করার জন্য মৌখিকভাবে পুলিশ সুপার, সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে জানিয়েছি যে আমি কিছু ত্রাণ দিব। এ জন্য একটি প্যান্ডেল তৈরি করা প্রয়োজন। সে অনুসারে ত্রাণ বিতরণের জন্য আমাদের প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছিল। গতকাল রাতে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা প্যান্ডেলটি ভেঙে দিয়েছে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের মহড়ার কারণে আমি এলাকায় গিয়েও ত্রাণ বিতরণ করতে পারিনি।’
শরীয়তপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) খায়রুল হাসান বলেন, ‘পুলিশের কাছে বিএনপি কোনো অনুমতি চায়নি। তারা ত্রাণ বিতরণ করবে এমন কোনো বিষয় আমাদের জানা ছিল না। তারা কোথাও কোনো ত্রাণ বিতরণের জন্য আসেনি। ওই মাঠটি ছাত্রলীগের একটি কর্মসূচির জন্য অনুমতি দেওয়া ছিল। উভয় পক্ষ উত্তেজনাপূর্ণ থাকায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।’