অন্যের নামে গাড়ি, মালিক দাবি করায় জরিমানা
নিজের গাড়ি দাবি করে হাইকোর্টে রিটকারী এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। প্রকৃত মালিককে বিচারিক আদালতে আবেদন করে আইন অনুসারে গাড়ি ফেরত নিতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি এ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। গাড়ির মালিক দাবিদার মো. মোমিন উদ্দিনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।
বেলায়েত হোসেন জানান, রাজধানীর কুড়িলের ব্যবসায়ী মো. মোমিন উদ্দিন গত ১৩ জুলাই ভাটারা থানাধীন একটি শপিং মলের সামনে গাড়ি (টয়োটা এলিয়ন, ১৫০০ সিসি, ঢাকা মেট্রো গ-২৭-৮৯৫৫) রেখে শপিং করতে যান। পরে নিচে এসে দেখেন গাড়িটি নেই। খবর নিয়ে জানতে পারেন ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শহীদুল ইসলাম গাড়িটি থানায় নিয়ে গেছেন। পরে গাড়ির মালিকানা এবং বিআরটিএর (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) কাগজপত্র দাখিলের পরও গাড়ি ফেরত পাননি মোমিন উদ্দিন।
এরপর ২২ আগস্ট ওই ব্যবসায়ী গাড়ি ফেরত পেতে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন বলে জানান ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন। রিটের শুনানি নিয়ে জব্দ করা গাড়িসহ ভাটারা থানার ওসিকে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ আদেশ অনুসারে সকালে হাইকোর্টে হাজির হন ভাটারা থানার ওসি কামরুজ্জামান ও এসআই শহীদুল ইসলাম।
শুনানিতে তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, ১৩ জুলাই পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি জব্দ করে। পরের দিন বিচারিক আদালতে জব্দ তালিকা দাখিল করে।
এদিকে, গাড়ির মালিকের পরিচয় জানতে চেয়ে পুলিশ বিআরটিএকে চিঠি দিলে তারা জানায় গাড়ির মালিক মাহজাবিন চৌধুরী। এ ছাড়া গাড়ির মালিক দাবিদার মোমিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভাটারা ও দাউদকান্দি থানায় তিনটি মামলা আছে।
এ সময় আদালত মোমিন উদ্দিনের আইনজীবীর কাছে মালিকানা বিষয়ে জানতে চান। তখন বেলায়েত হোসেন বলেন, গাড়িটি নোবেল কার হাউস থেকে কেনা হয়েছে। তাঁরা কিনেছেন মাহজাবিন চৌধুরীর কাছ থেকে। তাঁরা বিআরটিএর কাছে মালিকানা হস্তান্তরের আবেদন করেছেন। সব ধরনের ফি পরিশোধ করেছেন।
এ সময় আদালত বলেন, কিন্তু চুক্তিনামা, মালিকানা হস্তান্তরের কিছুই তো দেখাতে পারছেন না। বিআরটিএ বলছে, গাড়ির মালিক মাহজাবিন চৌধুরী।
ওসি কামরুজ্জামান জানান, গাড়িটি নিম্ন আদালতের আদেশে জব্দ করা হয়েছে।
এরপর আদালত তিন মামলায় মোমিন উদ্দিন জামিনে আছেন কি না সে বিষয়ে খোঁজ নিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন। এই সময়ে অর্থাৎ ২টা পর্যন্ত তাঁকে কোর্ট পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। পরে মোমিন উদ্দিন তিন মামলায় জামিনে আছেন, এ তথ্য জানার পর আদালত আদেশ দেন।
তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, কথিত মালিক মোমিন উদ্দিন সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। তিনি গাড়ির প্রকৃত মালিক নন। এ কারণে আদালত তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।