স্বস্তি অনুভব করছি : অ্যাটর্নি জেনারেল
নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলায় হাইকোর্টের রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে। এ শাস্তি হওয়ায় আমি স্বস্তি অনুভব করছি।’
নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ও রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া বাকি ১১ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাদের যাবজ্জীবন করা হয়েছে, রায়ের কপি দেখে আমরা পর্যালোচনা করে এদের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করব।’
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকতা আরো বলেন, ‘নূর হোসেনের পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপথগামী কিছু সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীকে দোষারোপ করা যাবে না। আমরা আশা করি এ দণ্ড উচ্চ আদালতে বহাল থাকবে।’
‘তদন্তে ত্রুটি, বিচ্যুতি আছে’
আসামিপক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব আসামিকে দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে, এদের অনেকে ওই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না। মামলার তদন্তেও ত্রুটি, বিচ্যুতি আছে।’
এস এম শাহজাহান আরো বলেন, মামলার রায়ের কপি হাতে এলে পর্যালোচনা করে আপিল করা হবে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনের আইনজীবী লুৎফর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নূর হোসেন টাকা দিয়েছেন বা মোবাইলে নির্দেশ দিয়েছেন এ ধরনের সত্যতা পাওয়া যায়নি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।’
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১১-এর চাকরিচ্যুত অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত কমান্ডার এম এম রানা, চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ হোসেন, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এবি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, সৈনিক বেলাল হোসেন, সৈনিক আল আমীন, আবু তৈয়ব আলী, মো. শিহাবউদ্দিন, পূর্ণেন্দু বালা, আবদুল আলিম, মনিরুদ্দিন মুন্সী ও তাজুল ইসলামের ফাঁসি বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
আসাদুজ্জামান নূর, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আবুল বাশার, মোর্তজা জামান চার্চিল, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাজাহান ও জামাল সরদারের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া নিম্ন আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত নয়জনের সাজা বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোডের খানসাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের পাশ থেকে নাসিকের (নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন)কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তাঁর সহযোগী সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ করে র্যাব-১১।
পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পৃথক দুটি মামলা করেন।