গুলি করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেশে দ্বিতীয়
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ১০ জনকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের রায় বাংলাদেশে এটা দ্বিতীয়।
আজ রোববার ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম এই নির্দেশ দেন।
এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বিচারক কাজী গোলাম রসুল ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন। যদিও উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি শেষে ১২ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর করা হয়।
আজকের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১০ আসামি হলেন ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক হোসেন ওরফে মারফত আলী, মোহাম্মদ রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান খান ওরফে শিমুল খান, মো. ইউসুফ ওরফে মোসাদ মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু ফকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে মুফতি।
বিচারক তাঁর রায়ে বলেন, ‘দ্য স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট, ১৯৭৪-এর ১৫(১)(এ)(বি)(সি)/২৫(ডি) ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে উক্ত ধারা মতে তাঁদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত পদ্ধতি মোতাবেক গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।’
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড পাওয়া প্রত্যেক আসামি ইচ্ছে করলে এই দণ্ডের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে পারবেন।
মুফতি হান্নান শুরুতে এই মামলার আসামি থাকলেও পরে আরেকটি মামলায় তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয় তাঁর নাম।
অন্যদিকে, মামলার ১১ নম্বর আসামি মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
১২ নম্বর আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, ১৩ নম্বর আসামি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, ১৪ নম্বর আসামি সারোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া খন্দকার মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন শাকের, আরিফ হাসান, মুন্সী ইব্রাহীম, মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, মোহাম্মদ লোকমান, শেখ মো. এনামুল হক, মো. মিজানুর রহমান, মাওলানা সাব্বির, মাহমুদ আজাদ ও মো. আবুল হোসেন ওরফে খোকনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ২২ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশ করার কথা ছিল। এর আগে ২০ জুলাই ওই কলেজের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করা হয়।
পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সী আতিকুর রহমান আসামি মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।