‘আমরা, বিচার বিভাগ যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি’
‘আমরা, বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি। যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে ইয়ে করেছেন। সেখানে কিছুই (আলোচনা-সমালোচনা) হয়নি। শুধু বলব, আমাদের আরো কিছু পরিপক্বতার দরকার আছে।’
আজ রোববার অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি চূড়ান্ত করার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জুলাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করে রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। এ রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন দুপুরেই পদত্যাগ করেন নওয়াজ।
শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি চূড়ান্ত করার সময় আবেদন করেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘গত তারিখে কী কথা ছিল? কার সঙ্গে কে কে থাকবে, তা ঠিক করে আলাপ-আলোচনা করার কথা ছিল। কে কে থাকবে?’
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ল মিনিস্টার (আইনমন্ত্রী)।’
তখন আদালত বলেন, ‘অল দ্য জাজেস অব অ্যাপিলেট ডিভিশন (আপিল বিভাগের সব বিচারপতি)। এতই আমরা ইয়ে হয়ে গেলাম আলোচনা পর্যন্ত করলেন না?’
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘আপনারা মিডিয়ায় অনেক কথা বলেন। কোর্টে এসে অন্য কথা বলেন। আপনাদের বলছি, আপনিই বলেন। কবে কী হবে?’
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘একটা আনস্টেবল সিচুয়েশন (অস্থিতিশীল পরিস্থিতি) তৈরি হয়ছে।’
তখন প্রধান বিচারপতি ‘আনস্টেবল সিচুয়েশনের’ ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সবটা নিয়েই আমি বিব্রত।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা ঝড় তুলছেন। আমরা কোনো মন্তব্য করেছি?’
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘না, আপনারা করেননি।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনার চাওয়ামতো ৮ তারিখ রাখলাম।’
এ সময় এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম তাঁর আবেদনের শুনানির আরজি জানান।
জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগ ধৈর্য ধরছি। যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি। আজকে একজন কলামিস্টের লেখা পড়েছি, সেখানে ধৈর্যের কথাই বলা হলো।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রী কে ইয়ে করল। সেখানে কিছুই (আলোচনা-সমালোচনা) হয়নি। আমাদের আরো পরিপক্বতা দরকার।’
পরে বিচারিক আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেন আপিল বিভাগ। অবশ্য এর আগেও কয়েক দফা সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।