চালের দাম নিয়ে মানুষের মধ্যে হা-হুতাশ নেই : খাদ্যমন্ত্রী
চালের দাম নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো হা-হুতাশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলে চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই।
আজ বুধবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ ছাড়া কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী আরো জানান, চাল আমদানির ট্যারিফ বা শুল্ক আরো ৮ শতাংশ কমিয়ে ২ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে খাদ্যশস্য আমদানির ওপর শুল্ক ছিল ২৮ শতাংশ। পরে দাম বাড়ার কারণে শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে আনা হয়। আজকের বৈঠকে আরো ৮ শতাংশ শুল্ক কমানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে খাদ্যশস্য আমদানির ওপর এখন ২ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
মন্ত্রীর বক্তব্যের পর তাঁর উদ্দেশে এক সাংবাদিক বলেন, এর আগে ২৬ শতাংশ শুল্ক কমলেও চালের দাম বেড়ে ৬০ টাকা কেজি হয়েছে। ট্যারিফ কমলেও তার প্রভাব বাজারে পড়েনি। এবার আট শতাংশ কমানোর প্রভাব বাজারে পড়বে কি না বা মানুষ সুফল পাবে কি না?
জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, আয় বেড়েছে, দেশের পরিস্থিতি আর এখন তেমন পর্যায়ে নেই যে চালের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কমে যাবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা যে বলছেন চালের দাম বেড়েছে, এই চালের দাম বাড়া নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো হা-হুতাশ নেই। মানুষ উদ্বিগ্ন নয়, মানুষ কোনো সংকটেও নেই। কোথাও কোনো ধরনের কোনো খাদ্য সংকট নেই।’
মন্ত্রী বলেন, এবার সরকার বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল এক কোটি ৯১ লাখ মেট্রিক টন। আগাম বন্যা এবং ব্লাস্ট (চিটা) হয়ে যাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যহত হয়। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তিনি বলেন, ১৫ লাখ টন চাল ও ৫ লাখ টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুই লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন আমদানি করা চাল বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্যে চলে এসেছে। এর মধ্যে কিছু চাল খালাসের কাজও শুরু হয়েছে।
সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে আট লাখ টন চাল ও সাত লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এই সংগ্রহও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আমদানি করে খাদ্য মজুদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
দেশে যদি খাদ্য সংকট না থাকে তাহলে খাদ্য আমদানির উদ্যোগ কেন নেওয়া হলো জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম বলেন, আগাম সতর্কতার জন্যই আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চালের বাজার স্থিতিশীল আছে এবং এটা স্থিতিশীলই থাকবে।