সাক্ষী না আসায় পেছাল তাজিয়া মিছিলে হামলার সাক্ষ্যগ্রহণ
পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলার মামলায় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১০ সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
আজ রোববার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত দিনে কোনো সাক্ষী না আসায় ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আবুল কাশেম নতুন দিন ধার্য করেন।
গত বছর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক শফিউদ্দিন শেখ ১০ জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এই ১০ জন হলেন কবির হোসেন, মাসুদ রানা, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাসুদ, আবু সাঈদ সোলেমান, শাহ জালাল, ওমর ফারুক, চাঁন মিয়া, রুবেল, আরমান ও জাহিদ হাসান।
হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে জেএমবির ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি। এর মধ্যে শাহাদাত ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা, আবদুল্লাহ বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান, সাঈদ ওরফে হিরণ ওরফে কামাল ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জাহিদ হাসান, আরমান, রুবেল ইসলাম ও কবির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর আশুরার রাতে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলায় কেঁপে ওঠে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় তীর্থস্থান হোসেনী দালান ইমামবাড়া। এ ঘটনায় দুজন নিহত হন। আহত হন শতাধিক মানুষ। তাঁদের মধ্যে ৫৭ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১৭ জন মিটফোর্ড হাসপাতালে ও ১৬ জন মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা যায়, ঘটনার সময় দিবাগত রাত দেড়টা থেকে হোসেনি দালানের ফটকে একটি তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। মিছিলটি পল্টনে যাওয়ার কথা ছিল। মিছিলে যোগ দিতে এসেছিলেন তরুণ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। এর মধ্যেই রাত পৌনে ২টার দিকে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। কেউ কেউ পরপর ১০ থেকে ১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কেউ বা দৌড় দিতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পায়ের তলায় পড়েন। কান্না-চিৎকারে ভারি হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
আশপাশের বাসিন্দারা যে যেভাবে পারেন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান, লেগুনায় আহতদের ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জালাল উদ্দিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।