বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত পাঠাতে কানাডার প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে কানাডার প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কানাডার বিদায়ী হাইকমিশনার বেনুয়া-পিয়ের লারামি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নূর চৌধুরী ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে তিনি কানাডার ‘প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট ল’এর সুযোগ নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে কানাডার হাইকমিশনার বলেন, তিনি বাংলাদেশের এই উদ্বেগের কথা কানাডার যথাযথ কতৃর্পক্ষকে অবহিত করবেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ কথা জানান।
আগামী নির্বাচনের বিষয়টিও তাঁদের আলোচনায় স্থান পায় উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, তাঁরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বচ্ছ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়েও মতবিনিময় করেন।
নির্বাচন পদ্ধতিতে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নে তাঁর সরকারের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর দল অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে। এর আগে ’৭৫ থেকে ’৯০ সাল পর্যন্ত দেশে কোনো স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়া ছিল না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
গত নির্বাচনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেজন্য তাঁর সরকার গত নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তাদের যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আসতে এবং সরকারের যেকোনো মন্ত্রণালয় গ্রহণের প্রস্তাব দেই। অথচ, তারা অংশ না নিয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করে।’
বৈঠকে সন্ত্রাস মোকাবিলায় সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এজন্য সব শ্রেণি-পেশা, গোত্র, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করে গণসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন।
কানাডার হাইকমিশনার বেনুয়া-পিয়ের লারামি এ দেশে দায়িত্ব পালনকালে সব রকমের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং মাতৃভাষা, ইতিহাস ও কৃষ্টির প্রতি বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা এবং মাতৃভাষা রক্ষায় উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশগুলোর অন্যতম কানাডা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমেই গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নে তাঁর সরকারের সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে হাইকমিশনার এ বছর ঢাকায় সফলভাবে আইপিইউ (ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন) সম্মেলন আয়োজনেরও প্রশংসা করেন।
আগামী দুবছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।