‘সমন্বয়হীনতাই ঢাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ’
ভাঙা সড়ক, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, সড়কে জলাবদ্ধতা এবং সেই সঙ্গে উন্নয়ন ভোগান্তি- এসবই হলো রাজধানীবাসীর জীবনযাপনের নিত্যসঙ্গী। বেহাল এই দশা থেকে কবে মুক্তি মিলবে তাও জানা নেই তাদের। আর মানুষের এসব ভোগান্তির জন্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন নগর বিশ্লেষকরা।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রোকেয়া সরণী কেটে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়েছে। আর এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই সড়ক ব্যবহারকারী নগরবাসী। একেকটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান একেক সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ওই এলাকার মানুষের উন্নয়ন দুর্ভোগের শেষ নেই। যে কারণে আগারগাঁও, তালতলা ও মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় লেগে থাকা যানজটের সীমাহীন কষ্ট মানুষের নিত্যভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে নগর বিশ্লেষক প্রকৌশলী মোবাশ্বের হোসেন বলেন, এশিয়ার বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশের রাজধানীতে যোগাযোগব্যবস্থা এমনভাবে স্থাপন করেছে যা মেরামত কিংবা পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না আগামী অন্তত ৫০ বছরেও। ঢাকায়ও সে রকম সমন্বিত উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দেন তিনি।
মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কার্যকর এখনো হয় নাই। সেটা হচ্ছে কমন ইউটিলিটি ডাক্ট। অর্থাৎ স্থায়ীভাবে মাটির নিচে এই সব সার্ভিস লাইনগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত ব্যবস্থাপনা থাকবে। অর্থাৎ তোমাকে রাস্তা খুঁড়তে হবে না। ম্যানহোল দিয়ে ভেতরে ঢুকবা, সিঁড়ি দিয়ে ঢুকবা। ওইখানে বসে তুমি গ্যাসের লাইন চেঞ্জ করবা, ওখানে ইলেকট্রিক লাইন, টেলিফোন লাইন হোয়াটএভার ইট ইজ।’
নগরবাসীর অন্তহীন ভোগান্তির শেষ এখানেই নয়। তীব্র গরমের পর বর্ষা যখন মানুষকে স্বস্তি এনে দেয়, তখন একটু হালকা বর্ষণেই ভেসে যায় নগরীর কোনো কোনো এলাকা। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পরিণত হয় ছোটখাটো ডোবা কিংবা জলাশয়ে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমরা এ সমস্যাগুলোর সমাধান করব। কিন্তু এখন ঢাকা শহরের বক্স কালভার্টগুলো, যেটা দিয়ে আপনার পানিটা যাবে সেটা তো আপনার ক্লগট হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে। খালগুলো যেটা দিয়ে নামবে পানি ওটার ওপরে তো পাঁচতলা বিল্ডিং হয়ে আছে। ঢাকার আশপাশের নদীগুলো ভরাট করে ভূমিদস্যুরা প্লট বাণিজ্য করছে।’
ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকায় প্রতিবছর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শুধু জলাবদ্ধতাসহ নানা ধরনের জনদুর্ভোগই সৃষ্টি হচ্ছে না, ক্ষতি হচ্ছে বিপুল সম্পদেরও। তাই দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের দাবি ঢাকার প্রতিটি নাগরিকের।