গুলিতে আহত সিদ্দিকুরের দৃষ্টিশক্তি ফেরার আশা ক্ষীণ
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশের গুলিতে আহত সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুরের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার আশা খুবই কম বলে জানিয়েছেন অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক।
আজ শনিবার সিদ্দিকুরের অস্ত্রোপচার শেষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (গ্লুকোমা) ইফতেখার মো. মুনির সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।
সিদ্দিকুরের চিকিৎসক বলেন, ‘আজ সকালে সিদ্দিকুরের একটি অপারেশন করা হয়েছে। এ সময় তার ডান চোখের ভিতর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কর্নিয়া, জেলসহ অনেক কিছু বের করা হয়েছে। আর বাম চোখের ভিতরে রক্তসহ অনেক কিছু জমা রয়েছে। সেগুলোকেও ওয়াশ করা হয়েছে। তবে তার দুই চোখের ব্যাপারে আমরা সন্দিহান।’
এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখার মুনির বলেন, ‘বিদেশে চিকিৎসা করলে তার চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে পারে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা একটি মেডিকেল বোর্ড বসাব। বোর্ডেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে, উন্নত চিকিৎসায় তাঁর চোখের দৃষ্টি ফিরবে কি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সিদ্দিকুরের ডান চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। আর বাম চোখ ভালো হওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা-ও খুবই কম।
গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নেয়। এ সময় সাত দফা দাবিতে জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেনশিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আন্দোলনের জন্য শাহবাগ থানার পুলিশ তাঁদের আধা ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়। পুলিশের বেঁধে দেওয়া সময় পার হয়ে গেলে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করা হয়। এ সময় শাহবাগ এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে সাধারণ মানুষ এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করে।
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুলিশের রাবার বুলেট সিদ্দিকুর রহমানের চোখে বিদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেন সহপাঠীরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
ওই দিন ঢামেক হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ওয়াসেক বিন শহীদ এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘সিদ্দিকুর রহমানের দুই চোখে বড় ধরনের আঘাত আছে। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখতে পারবে কি না আমাদের সন্দেহ আছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তাকে দ্রুত আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।’