নদী বাঁচাতে জাতীয় নদী অলিম্পিয়াড আয়োজন
নদীর সঙ্গে বাঙালির সম্পর্ক হাজার বছরের। এ দেশের রাজনীতি, সমাজ এবং অর্থনীতির চাকা আবর্তিত হতো নদীকে ঘিরেই। দুই বাংলার অধিকাংশ নগরীও গড়ে উঠেছে কোনো না কোনো নদীর তীরে। কিন্তু প্রতিনিয়ত দূষণ আর অবহেলার কারণে হাজার বছরের বন্ধু নদী যেন এক হারানো উপাখ্যান! নদীকেন্দ্রিক সভ্যতার গল্প এখন যেন রূপকথায় পরিণত হয়েছে নতুন প্রজন্মের কাছে।
তরুণদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে ‘রিভারাইন পিপল’ নামে একটি সংগঠন। ঢাকাভিত্তিক এ সংগঠনটির উদ্যোক্তারা এবার আয়োজন করতে যাচ্ছেন ‘জাতীয় নদী অলিম্পিয়াড’।
বিশ্বে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় এই নদী অলিম্পিয়াড। বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বমোট ১০টি ইউনিট থেকে বিশজন করে প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছে চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী ২২ জুলাই পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) মিলনায়তনে শুরু হচ্ছে প্রতিযোগিতাটি।
আয়োজকরা জানান, প্রতিটি বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মোট ২০০ জন শিক্ষার্থী বিভাগীয় নদী অলিম্পিয়াডে অংশ নেন। বিভাগীয় পর্যায় থেকে ২০ জন প্রতিযোগী বাছাই করেছেন তাঁরা। নদী সম্পর্কিত বহু নির্বাচনী প্রশ্নের মাধ্যমে বাছাই করা হয় বিজয়ীদের। আটটি বিভাগ থেকে মোট ১৮০ জন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিভাগ থেকে আরো ২০ জনসহ মোট ২০০ শিক্ষার্থী চূড়ান্ত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে অংশ নেওয়া মোট দশটি ইউনিট হলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যক্তিগত এবং দলগতভাবে বিজয়ী নির্বাচিত করা হবে। জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীরা পরবর্তীতে দক্ষিণ এশিয়া এবং আন্তর্জাতিক নদী অলিম্পিয়াডে অংশ নেবেন আয়োজকরা।
রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, ‘জাতীয় নদী অলিম্পিয়াড নিছক কোনো প্রতিযোগিতা নয়। এটি ব্যতিক্রমধর্মী নদী আন্দোলন। আমরা এ আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে নদী বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি এই তরুণরাই নদী বাঁচাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।’