নরসিংদীতে ডিবি পরিচয়ে ২০ হাজার টাকা ছিনতাই
নরসিংদীতে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে ২০ হাজার টাকা ছিনতাই করেছে একদল সন্ত্রাসী। সোমবার রাতে শহরের ভেলানগর ব্যাংক কলোনির রাস্তায় এ ছিনতাই হয়।
ছিনতাইকারীরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধীরেন্দ্র সূত্রধরকে ধরে ভেলানগর অদুদ মিয়ার বাড়িতে আটকে রাখে। সেখানে তাঁকে বেধম মারপিট করে সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ধার করে আনা টাকা ফিরে পেতে দরিদ্র ধীরেন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী হেলন সূত্রধর থানা ও ডিবি পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কোথাও পাত্তা না পেয়ে মঙ্গলবার নরসিংদী প্রেসক্লাবে এসে ২০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।
জানা যায়, মনোহরদী উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত জগবন্ধু সূত্রধরের ছেলে ধীরেন্দ্র সূত্রধর সোমবার জমির কাগজপত্র তুলতে নরসিংদী শহরে আসেন মহাফেজখানায় আসেন। কাগজপত্রের আবেদন করে তিনি চলে যান পাঁচদোনায় ভাগ্নির জামাই মাধব সূত্রধরের বাড়িতে। সেখান থেকে সাংসারিক কাজের জন্য ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নরসিংদী আদালতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় মনোহরদীর উদ্দেশে ভেলানগর বাসস্ট্যান্ডের দিকে রওনা দেন। ব্যাংক কলোনি রাস্তার পাশে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিবি পরিচয়ে দুজন ছিনতাইকারী তাকে জোর করে ধরে অদুদ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর আরো একজন ছিনতাইকারী দুজনের সঙ্গে যোগ দেয়। তারা সেখানে নিয়ে তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে এবং বলতে থাকে ‘তুই ইয়াবা ব্যবসায়ী, কাপড় খুল’। একপর্যায়ে তারা ধীরেন্দ্রের লুঙ্গি খুলে আন্ডারওয়্যারের পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে যায় যে কারো কাছে বললে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলবে। এ অবস্থায় তিনি সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামালের কাছে গিয়ে ঘটনা জানান।
মঙ্গলবার সাংবাদিকরা ছিনতাইয়ের ঘটনাস্থল অদুদ মিয়ার বাড়িতে গেলে সেখান থেকে বাড়ির এক ভাড়াটিয়া জানান, অদুদ মিয়ার এই বাড়িটি সন্ত্রাসী ছিনতাইকারীদের একটি আড্ডা খানা। বাড়ির মালিক অদুদ বাড়ি ভাড়া দিয়ে অন্যত্র বসবাস করেন। ছিনতাইকারীরা লোকজনকে ধরে বাড়িতে এনে সর্বস্ব ছিনতাই করে নিয়ে যায় এবং মেয়েদের এনে অসামাজিক কার্যকলাপ চালায়। তাদের বিরুদ্ধে প্রাণের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এসব ঘটনা বাড়ির মালিক অদুদকে জানানোর পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনার কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যদি পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে তার নির্দেশে ডিবি পুলিশ এসব অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।’