যে কারণে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখায় পুলিশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জীবিত এক ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়ায় ওই ব্যক্তির হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ‘মৃত’ দেখানোর ঘটনায় এরই মধ্যে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) হাইকোর্টে তলব করা হয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে।
রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। রুলে পুলিশি প্রতিবেদনে জীবিত ব্যক্তিতে মৃত দেখানো কেন বেআইনি হবে না-তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্রসচিব, ধর্মসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) ও আখাউড়া থানার ওসিকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মো. কায়সার জাহিদ ভূঁইয়া।
আখাউড়া থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফদার বলেছেন, ভুলে মৃত ব্যক্তির কলামে জীবিত ব্যক্তির নাম বসে যায়। পরে তা সংশোধনী আকারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের বড় কুড়িপাইকা গ্রামের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মো. আজাদ হোসেন ভূঁইয়া এ বছর হজে যাওয়ার জন্য বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছিলেন। আগামী ২৯ জুলাই তাঁর হজে যাওয়ার কথা। কিন্তু আখাউড়া থানার পুলিশ তাঁকে মৃত দেখিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। গত ২০ জুন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পুলিশি প্রতিবেদনে নিজেকে মৃত হিসেবে দেখতে পান আজাদ। এতে হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হয়। পুলিশের এ প্রতিবেদনে বিরুদ্ধে আজাদ গত ১১ জুলাই উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।
আজাদ হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘একদিন থানা থেকে এসআই আবুল কালাম আমাকে ফোন করে পুলিশ প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য যেতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি ব্যবসায়িক জরুরি কাজে ঢাকায় ব্যস্ত থাকায় সেদিন যেতে পারিনি। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পুলিশি প্রতিবেদনে জানতে পারি, আমাকে মৃত দেখিয়েছে পুলিশ।’
আজাদ হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশকে সন্তুষ্ট করতে না পারায় ইচ্ছেকৃতভাবে তাঁকে মৃত উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে বলে তাঁর ধারণা। হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় তিনি খুবই চিন্তিত বলে জানান।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন তরফদার বলেন, ‘আজাদ হোসেনের পুলিশি প্রতিবেদন ভুল হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। উচ্চ আদালত আমাকে ২৩ জুলাই স্বশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এখনো দাপ্তরিক চিঠি পাইনি।’
ভুলের কারণ জানতে চাইলে ওসি দাবি করেন, ‘টাইপের ভুলে আজাদ হোসেন ভূঁইয়াকে মৃত দেখানো হয়েছিল। এটি সংশোধন করে পুনরায় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।’