ভৈরবে মৎস্য বিভাগের সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বিভিন্ন এলাকার খাল-বিল, নালাসহ নিচুভূমি অবাধে ভরাট হয়ে যাওয়ায় কমে যাচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। দ্রুত নগরায়নের কারণে জলাশয় ভরাটের এই মহোৎসবের ফলে অবশিষ্ট খাল-বিলের সঙ্গে নদ-নদীগুলোর সংযোগ না থাকায় প্রাকৃতিক ওই সব মাছের প্রজনন সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, বোয়াল ইত্যাদি মাছ বদ্ধ জলাশয়ে ডিম ছাড়তে অনীহার কারণে এদের বংশ বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে কারেন্টজালের মাধ্যমে জেলেরা পোনামাছ শিকার করায় মাছের অবাধ বৃদ্ধি কমে যাচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরব উপজেলা মৎস্য বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল।
রিপন কুমার পাল জানান, মৎস্য সেক্টরের এসব অনিয়ম রোধে অবিলম্বে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ভৈরবের বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে গত তিনদিনে ৪১২ কেজি পোনামাছ জব্দ করা হয়েছে। রুই, বোয়াল, মৃগেল, কালিবাউশ ইত্যাদি মাছের ৯ ইঞ্চির কম লম্বার পোনা মাছ এক শ্রেণির জেলে কারেন্টজালের মাধ্যমে শিকার করে বিক্রি করছে। এতে তারা সাময়িকভাবে লাভবান হলেও, ওই সব মাছের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করছে এই পোনা নিধন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রিপন পাল জানান, ভৈরবের তিন হাজার মৎস্যজীবী পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। ইলিশ মাছ শিকারি জেলেদের মতো আগামী অর্থ বছর থেকে তারাও হয়তো ভাতাদি পাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মৎস্য কর্মকর্তা জানান, কারেন্টজাল এলাকার পোনা নিধনের অন্যতম হাতিয়ার। তিনি কারেন্টজালের ব্যবহার নিষিদ্ধের মতো এই জাল প্রস্তুত, বিক্রি ও গোদামজাতের ওপর কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানান।
‘মাছচাষে গড়ব দেশ, বদলে দিব বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে ধারণ করে এলাকায় বেশি বেশি করে মাছ চাষ করার আহ্বান জানিয়ে রিপন পাল বলেন, মাছচাষিদের তাঁর দপ্তর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহায়তা করবে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন মৃধাসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।