পুলিশ সার্জেন্টকে মারধর, জবি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় পুলিশ সার্জেন্টকে মারধরের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদী মারধরের শিকার সার্জেন্ট কাওসার হামিদ। এতে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। তবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকাল ৫টার দিকে রূপসী বাংলা ক্রসিং থেকে ফার্মগেট অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বহনকারী ডাবল ডেকার ৩টি বিআরটিসি বাস বাংলামোটর ক্রসিংয়ে এসে আকস্মিকভাবে তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে উল্টো পথে ফার্মগেটের দিকে যাওয়ার জন্য বাংলামোটর ফুটওভার ব্রিজের পূর্বাংশের নিচে আসে। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট কাওসার হামিদ অন্য পুলিশ সদস্যসহ বাস তিনটিকে উল্টো পথে না যাওয়ার জন্য বলে। এ কথা শোনার পর তিন বাসের চালকই বাস তিনটি সোনারগাঁও থেকে রূপসী বাংলা অভিমুখে গমনকারী যানবাহনের গতিপথ রোধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। গাড়িচালকদের দ্রুত তাদের গাড়ি সরিয়ে নিয়ে সঠিক পথে যাওয়ার কথা বলতে না বলতেই বাসগুলোয় থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতপরিচয় ৩০ থেকে ৪০ ছাত্র চিৎকার দিয়ে নেমে এসে সার্জেন্ট কাওসার হামিদের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয় এবং উল্টো পথে তাদের যেতে না দিলে তাঁরা প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এর মধ্যে বাংলামোটর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন আবারো বাসচালকদের গতিপথে ফিরে যাওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্ররা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং তার পরনের পুলিশের ইউনিফরমের বিভিন্ন অংশ ছিড়ে ফেলে। তখন তাঁর চিৎকারে ঘটনাস্থলের পাশে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন ও সার্জেন্ট মো. আনিসুল হকসহ পুলিশ সদস্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর দ্রুত তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার থেকে আরো জানা যায়, সরকারি কর্তব্যপালনের সময় প্রকাশ্যে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করা, পথ রোধ করে যানবাহন ও মানুষ চলাচল বিঘ্নিত করা এবং সরকারি কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।
ঘটনা ও মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সার্জেন্ট কাওসার হামিদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তিনি এই ঘটনার সঠিক বিচার চান, যেন অপরাধীরা শাস্তি পায়। আর ঘটনার পর থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবসময় তাঁর খোঁজখবর নিচ্ছেন। আর মামলার পর সব ধরনের সহযোগিতার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন।
ওই গাড়িচালক বা ছাত্রদের সম্পর্কে কোনোন বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সার্জেন্ট বলেন, ছাত্রদের কারো নির্দিষ্ট নাম এখনো জানা যায়নি। তবে ওই তিনটি গাড়ির মধ্যে দুটি গাড়ির নম্বর পাওয়া গেছে।