শিশুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ায় ক্ষমা চাইলেন এসআই
১১ মাসের শিশু ও মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করার ঘটনায় ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফুল ইসলাম।
আজ রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলমের আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা হাজির হয়ে এ ক্ষমা চান। এছাড়া অভিযোগপত্র দেওয়ার বিষয়ে তিনি আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন।
নিজের বক্তব্যে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ শেষ করে মাত্র কর্মজীবন শুরু করেছি। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা করে চাকরিতে বহাল থাকার সুযোগ দিতে আদালতের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সুযোগ দিলে মেধা, দক্ষতা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের সেবা করতে গতিশীল ও সোচ্চার হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘চাকরি জীবনের শুরুতে সামান্য অনিচ্ছাকৃত ভুলের ক্ষমা পেলে একটি জীবন ও একটি পরিবার ধ্বংসের হাত হতে রক্ষা পাবে।’ এরপর দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার জন্য প্রথমবারের মতো অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চান মারুফুল ইসলাম।
চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মারুফুল ইসলাম এক শিশু ও মৃত আরিফুর রহমানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বাদীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে আদালতে একটি আবেদন করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, যে শিশুটিকে আসামি করা হয়, সে গত বছরের ৬ জুন জন্মগ্রহণ করে। অপরদিকে আরিফুর রহমান ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৬ জুন মিরপুরের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান মামলা করেন। মামলার সময় শিশুটির বয়স ছিল ২০ দিন। আর আরিফুর রহমান ঘটনার তিন বছর আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছোট ছেলের বয়স ১১ মাস। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ২০ দিন। কীভাবে এত ছোট বাচ্চা মারামারি করতে পারে আর কীভাবে চুরি করতে পারে?’
অবশ্য মামলায় শিশুটির বয়স ৩০ বছর দেখানো হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার এসআই মারুফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত এবং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাজ্জাদ হোসেন ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কাজী মাহবুবুল আলমকে প্রত্যাহার করা হয়।