স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ঝাড়ুদারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা!
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝাড়ুদার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সমাজপতিরা সালিশ বসিয়ে ঝাড়ুদার পাবলু মিয়াকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত ঝাড়ুদার বাবলু মিয়া। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে ছোট ভাই পাবলু মিয়া ঝাড়ুদারের দায়িত্ব পালন করেন। গত ২৫ মে সকালে ক্লাস শুরুর আগে দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী তার এক চাচাত ভাই ও দুই সহপাঠীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে যায়। পাবলু মিয়া সহপাঠী দুজন ছাত্রীকে স্কুলের পেছনে গাছের পাতা কুড়াতে বলে সেখানে পাঠায়। এরপর চাচাত ভাইকে একটি কক্ষে গামছা দিয়ে বেঁধে রাখে। এরপর দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশু এই তথ্য জানিয়েছে। সে জানায়, ২০ মিনিট পরে পাবলু মিয়ার ভাই বাবলু মিয়া বিদ্যালয়ে এলে সে তাঁকে ঘটনাটি জানায়। তখন বাবলু মিয়া এই ঘটনাটি কাউকে না বলতে মেয়েটিকে পাঁচ টাকা দিয়ে দোকান থেকে কিছু খেতে বলে। শিশুর বড় ভাই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি শুনে এগিয়ে আসেন। তখন বাবলু মিয়া তাঁকে বলেন, এ বিষয়টি বাড়িতে বা অন্য কারো কাছে বললে তোকে মেরে নদীতে ফেলে দেব।
পরে স্কুলছাত্রীর বড় ভাই বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা ও দাদির কাছে ঘটনা জানায়। ওই দিন তাদের মা বিদ্যালয়ে গিয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক লুৎফেয়া বেগমের কাছে অভিযোগ করলেও সন্তোষজন উত্তর পাননি।
স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, বিষয়টি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে সমাধান করতে গতকাল ২৭ মে শনিবার এলাকার মোড়লরা তাঁকে ডেকে নেন। সালিশে মেয়ের চিকিৎসা বাবদ তাঁকে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে তিনি ২৬ মে ও ২৭ মে রাজনগর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।
স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আইনিভাবে অগ্রসর হলে পাবলু মিয়া ও তাঁর ভাইরা আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগটি কতটুকু সত্য তা ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়া বলা যাচ্ছে না। তবে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে এটা শেষ করতে চাইলে মেয়ের পরিবার তা মানতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে পাবলু মিয়া ও বাবলু মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ফাতেমা মমতাজ রুজি জানান, শিশুটির পরীক্ষা নিরীক্ষার বিষয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চলছে।