নরসিংদীর মনোহরদীর এক তরুণীকে পরিবারের অগোচরে জর্ডানে পাচার করে দেওয়া হয়। আর সেখান থেকে ওই তরুণীর পরিবারের কাছে টেলিফোন করে চাওয়া হয় দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয় দেশে অবস্থান করা রতন আর সোহেল নামের দুই ব্যক্তির কাছে।

এই ঘটনা জানিয়ে মনোহরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এক নারী। তিনি জানান, স্থানীয় লাভলী বেগম নামে এক নারী রতন ও সোহেলের মাধ্যমে তাঁর মেয়েকে জর্ডানে পাচার করেছে। জর্ডানে পাঠানোর পর তাঁর মেয়েকে অপহরণকারীরা হত্যার হুমকি দেয় এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এরপর তাঁদের পরিবারের কাছে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। আর সেই টাকা বাংলাদেশে অবস্থানরত রতন ও সোহেলের কাছে দেওয়ার জন্য বলে।

জিডিতে বলা হয়, টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় অপহরণকারীরা জর্ডান থেকে ওই নারীর মেয়েকে দিয়ে ফোন করায়। এ সময় মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘মা আমাকে বাঁচাও, ওদের দাবির টাকা দিয়ে দাও।’

এই ঘটনা জানতে পেরে অভিযানে নামে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পশ্চিম) গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার দল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন।

যুগ্ম কমিশনার আরো জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করে তাঁরা মেয়েটিকে জর্ডান থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ ছাড়া রাজধানীর মতিঝিল থানা এলাকার ইনার সার্কুলার রোড থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সকাল থেকে চালানো অভিযানে মো. রতন সরকার, মো. সোহেল আহমেদ ও মো. নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উদ্ধার করা তরুণীর বক্তব্য অনুযায়ী অপহরণকারীরা তাঁকে জর্ডানে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করতে চাপ প্রয়োগ করেছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আন্তর্জাতিক মানবপাচার দলের সক্রিয় সদস্য বলেও সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।