আটক ‘সমকামীদের’ বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা
সমকামিতার অভিযোগ এনে ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে ২৮ তরুণকে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)।
আজ শুক্রবার সকালে র্যাব-১০-এর অধিনায়ক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘তরুণরা র্যাবের কাছে সমকামিতার কথা স্বীকার করেছেন। গতকাল রাতে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সমকামিতায় লিপ্ত না হওয়ার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়নি। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হবে।’
দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু তরুণ কমিউনিটি সেন্টারটিতে জড়ো হয়েছিল। গ্রেপ্তার তরুণদের কাছে কিছু মাদক পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে র্যাব। সংস্থাটির অধিনায়কের আরো দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছে, তাঁরা সমকামিতার সঙ্গে জড়িত। ঘটনাস্থল থেকে কনডম ও লুব্রিকেটিং জেল জব্দ করা হয়েছে।
আটক তরুণদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং তাঁদের বেশিরভাগই ছাত্র বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। ফেসবুক এবং মুঠোফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁরা কেরানীগঞ্জের ওই কমিউনিটি সেন্টারে জড়ো হতেন। এর জন্য কমিউনিটি সেন্টারের মালিককে ১০ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর।
মেজর মনজুর নামের র্যাবের আরেক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, ওই কমিউনিটি সেন্টারে মাদক ও কনডম পাওয়া গেছে। আটক তরুণরা সমকামী। সেখানে তাঁরা মিলিত হতে গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে সমকামিতার বিরুদ্ধে বেশ কড়া আইন রয়েছে। সমকামিতার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাও হতে পারে। সমকামিতার এই আইন উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রণয়ন করা হয়। এখন পর্যন্ত আইনটিতে কোনো সংশোধন আনা হয়নি।
২০১৬ সালে রাজধানীতে সমকামীদের একমাত্র পত্রিকা ‘রূপবান’-এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার একটি শাখা। তবে বাংলাদেশে আল-কায়েদার অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।