টঙ্গীতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান, দুই নারীসহ আটক ১০
জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজ নির্মূলে গাজীপুরের টঙ্গীতে রোববার অভিযান শুরু করেছে জেলা পুলিশের ৫শতাধিক সদস্য।
রাজধানীর সন্নিকটে টঙ্গীর ১৫ ওয়ার্ডে এ অভিযান একযোগে শুরু করা হয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত একটানা এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অভিযানকালে দুই নারীসহ ১০ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় বিপুলসংখ্যক জিহাদি বই ও ৩টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ অভিযান শুরুর আগে দুপুরে টঙ্গী মডেল থানায় সাংবাদিকদের জানান, রাজধানীর পাশে থাকায় গাজীপুরের শিল্প শহর টঙ্গীতে জঙ্গি সংগঠনের নেতা-কর্মী, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামিরা অবস্থান করতে পারে এমন আশঙ্কায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। গাজীপুর সিটির টঙ্গী এলাকার ১৫টি ওয়ার্ডকে ৬০ ভাগে বিভক্ত হয়ে পাঁচ শতাধিক পুলিশ দুপুর ৩টার দিকে একযোগে অভিযান শুরু করে। অভিযানকালে পুলিশ সদস্যরা এলাকার প্রতিটি বাড়িতে যাবে। বাড়ির মালিকদের সহযোগিতায় ভাড়াটিয়াদের ফ্ল্যাট বা কক্ষে তল্লাশি চালাবে। যেসব বাড়িতে বাড়িওয়ালাদের পাওয়া যাবে না সেসব বাড়িতে পুলিশ সরাসরি প্রবেশ করবে। এসব এলাকার যেসব বাড়িতে বাড়ির মালিকরা থাকেন না সেখানে কারা, কতদিন ধরে অবস্থান করছেন, তাদের পেশা কী এবং কখন বাড়িতে যাওয়া আসা করে- এসব বিষয় মাথায় রেখে একযোগে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে এবং তথ্য সংগ্রহ করবে। এ অভিযান পর্যায়ক্রমে পুরো জেলায় অব্যাহত থাকবে।
পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ আরো বলেন, টঙ্গীতে হাজার হাজার বাড়িতে লাখ লাখ মানুষ বসবাস করে। প্রতিদিন টঙ্গী থেকে অগনিত মানুষ রাজধানীতে প্রবেশ করে। টঙ্গী, রাজধানীর কাছের নগরী হওয়ায় অপরাধীরা টঙ্গীতে আশ্রয় নিয়ে থাকে নিরাপদ মনে করে। এর আগে টঙ্গী থেকে হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। এ ছাড়া আরো বিভিন্ন অভিযানে টঙ্গী থেকে অনেক জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। এই জেলায় ৬টি কারাগার রয়েছে। অপরাধীরা অপরাধ করে এসব জেলখানার আশপাশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়ে থাকে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা এই অভিযানের মাধ্যমে এই ম্যাসেজ জনগণের কাছে দিতে চাই যে, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি ও জঙ্গিদের সমাজে কোনো ঠাঁই নেই, বিশেষ করে গাজীপুরের পুরো জেলায়। আজ শুরু হওয়া এ অভিযানের মাধ্যমে শিল্প নগরী টঙ্গী এলাকার হাজার হাজার বাসা বাড়িতে কোনো ধরনের লোকজন বসবাস করে তা আমরা সচক্ষে পরীক্ষা করে দেখবো।
টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, অভিযানের সময় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে বা পুলিশ সদস্যরা যাতে কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন না হয় সেজন্যই সমাজের সর্বস্তরের লোকজনদের নিয়ে এ অভিযান শুরু করা হয়েছে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ জানান, সন্ধ্যায় পর্যন্ত পুলিশের এ চিরুণি অভিযান চলে। অভিযানকালে টঙ্গীর বনমালা রোড ও আরিচপুর এলাকা থেকে দুই নারীসহ ১০ জনকে বিপুল সংখ্যক জিহাদি বই, তিনটি দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।