'আতিয়া মহলে' সেনা অভিযান চলছে
গোলাগুলি বা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা না গেলেও সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার 'আতিয়া মহলে' টানা পঞ্চম দিনের মতো অভিযান অব্যাহত রেখেছেন সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোরা।
শিববাড়ি এলাকায় এখনো সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। তাই অভিযান সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যাচ্ছে না।
সোমবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে সেনাবাহিনী জানায়, তাদের অভিযানে এক নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। জঙ্গি আস্তানায় আর কোনো জীবিত জঙ্গি নেই।
সকালে শিববাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী এরশাদ আলী জানান, সোমবার দিবাগত রাত বা মঙ্গলবার সকালে আর কোনো গুলি বা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি।
এদিকে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদুল হাসান এনটিভি অনলাইনকে মুঠোফোনে বলেন, পুলিশের কাছে দুটি লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ লাশের পরিচয় সম্পর্কে পুলিশ নিশ্চিত করবে। তিনি আরো বলেন, তাঁদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আতিয়া মহলের ভেতরে থাকা অন্য দুটি লাশ বের করে আনার প্রক্রিয়া সকাল থেকেই চলছে। তবে তাদের শরীরে থাকা আত্মঘাতী হামলায় ব্যবহৃত বিস্ফোরক ও ভবনে থাকা বিস্ফোরক সতর্কতার সঙ্গে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশের ভাষ্য
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) গণমাধ্যম শাখায় দায়িত্বরত সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) জেদান আল মুসা জানান, এখনো মোগরাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল সেনাবাহিনীর হস্তান্তর করা দুটি লাশের পরিচয় জানাননি। তিনি জানালে লাশের পরিচয় প্রকাশ করা হবে।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) খায়রুল ফজল বলেন, ‘আমরা লাশ দুটির পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারিনি। সেনাবাহিনীর কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করার পর সিলেট ওসমানী হাসপাতালের হিমঘরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ময়নাতদন্ত করার দায়িত্ব কোতোয়ালি থানার।’
এর আগে গতকাল রাতে খায়রুল ফজল জানিয়েছিলেন, আতিয়া মহলের নিচতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মর্জিনা ও কাওছার নামের দম্পতি। তিনি সে সময় লাশ দুটি মর্জিনা ও কাওছারের বলে জানিয়েছিলেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি সোহেল আহমদ জানান, এখনো লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অজ্ঞাত হিসেবে লাশ দুটি ময়নাতদন্তে নেওয়া হয়েছে। ডা. তাহমিনা আক্তার, ডা. শামসুল আলম, ডা. নাজিয়া বেগম লাশ দুটির ময়নাতদন্ত করছেন।
২৩ মার্চ, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আতিয়া মহলের নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানতে পারে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
পরের দিন শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ির ভেতর থেকে গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল। পরদিন তারা ওই ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে আনে।