আতিয়া মহলে আছে ২৯ পরিবার
সিলেটের শিববাড়িতে যেখানে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলছে, ‘আতিয়া মহল’ নামের এই বাড়িতে দুটি ভবন রয়েছে—পাঁচতলা ও চারতলা। বাড়ির মালিক উস্তার আলী জানিয়েছেন, দুটি ভবনে ২৯টি ইউনিট রয়েছে, সমানসংখ্যক পরিবার ভাড়া থাকে।
আজ শুক্রবার বিকেলে সেনাবাহিনীর আট সদস্যের একটি প্যারাকমান্ডো দল ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। এর আগে অভিযানে অংশ নিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘সোয়াট’। ‘সোয়াট’ এরই মধ্যে পুরো বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে কিছুটা ধীরে ধীরে এগোচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, জঙ্গিরা পাঁচতলা ভবনটির পেছন দিকে নিচতলায় অবস্থান করছে। এদের মধ্য মর্জিনা নামের এক নারী রয়েছেন। আর তাঁর সঙ্গে আরো একাধিক পুরুষ জঙ্গি রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর ফ্রিজের কম্প্রেসার ব্যবহার করে শক্তিশালী বোমা তৈরি করে রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এ অভিযানে অংশ নেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে আতিয়া মহল ঘিরে রাখে পুলিশ। মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, বেলা ১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হ্যান্ডমাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ১টা ৪৮ মিনিট থেকে ২টা ১৬ মিনিট পর্যন্ত জঙ্গিরা সাড়া দিয়েছিল। এর পর থেকে আর কোনো উত্তর নেই।
সোয়াট টিম আসায় এখন অভিযান শুরু করার একটি পরিকল্পনা করছে পুলিশ। বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ১০ বারের বেশি পুলিশের ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রামের ওই অভিযানের পর আটক জঙ্গিদের দেওয়া তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শিববাড়ি এলাকার পাঁচতলা বাড়িটি ঘিরে রাখেন সিলেটের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। এরপর ওই বাড়ির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন তারা। আজ ভোরে ভেতরে থাকা জঙ্গিরা গ্রেনেড চার্জ করে বলে স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়। পুলিশও কয়েক দফা গুলি ছোড়ে।
বাড়ির মালিক উস্তার মিয়ার সিলেট নগরীতে আতিয়া ট্রাভেলস নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি থাকেন দক্ষিণ সুরমার বান্দরঘাটে (বন্দরঘাট)।
গত জানুয়ারি মাসে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার পরিচয়ে কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম ওই বাড়ি ভাড়া নেন বলে জানিয়েছেন বাড়ির মালিক।
এর আগে সিলেটের পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে সর্বশেষ ব্রিফিং-এ জানান, বাকি ২৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের কথা বিবেচনায় তাড়াহুড়া না করে ধীরে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হচ্ছে।