দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ও ভারত আজ দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটের জন্য একটি অরবিট ফ্রিকুয়েন্সি সমন্বয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আবহাওয়ার ক্ষেত্রে স্যাটেলাইটের প্রয়োজনীয়তা পূরণ হবে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিটিআরসি কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধান অতিথি এবং পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট সম্পর্কে বলেন, এতে ১২টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে এবং বাংলাদেশ নিজের ব্যবহারের জন্য অন্তত একটি ট্রান্সপন্ডার পাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলে যে কোনো কাজে এটি ব্যবহার করতে পারব।’
বিটিআরসির চেয়ারম্যান আরো বলেন, ভারত এসএএসের পুরো ব্যয়ভার বহন করবে। তবে বাংলাদেশ শুধু নিজস্ব প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের খরচ বহন করবে। বাংলাদেশ আগামী ডিসেম্বরে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছি, যাতে এসএএস আমাদের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে বিঘ্ন না ঘটায়।’
২০১৪ সালের নভেম্বরে নেপালে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা (সার্ক) সংস্থার জন্য এ ধরনের ধারণা প্রকাশ করেছিলেন।
ভারতের হাইকমিশনার শ্রীংলা বলেন, তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য একটি উপহার হিসেবে এসএএস উৎক্ষেপণের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি বলেন, অঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে ভারত এসএএসের জন্য ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে।
হাইকমিশনার আরো বলেন, তাঁর দেশ শুধু বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটই নয়, ভবিষ্যতেও এ ধরনের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সহযোগিতা দিয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসএএস প্রায় প্রস্তুত। যত শিগগির সম্ভব এটি উৎক্ষেপণ করা হবে।
বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ ও নেপাল সার্ক স্যাটেলাইটের এ ধারণায় ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এ কনসোর্টিয়ামে যোগ দিতে অস্বীকার করেছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আর্থ-সামাজিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নন-কনভেনশনাল বিশেষ করে উচ্চ প্রযুক্তির স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তিনি আজ স্বাক্ষরিত অরবিট ফ্রিকুয়েন্সি সহযোগিতা চুক্তিকে আর্থ-সামাজিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের জন্য একটি বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিদেশে অবস্থানকারী ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এক অডিও বার্তায় এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন।