ভাঙছে মিলনমেলা
মাসব্যাপী ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৭’র শেষ দিন আজ মঙ্গলবার। এ উপলক্ষে গ্রন্থমেলার সময় চার ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
বাংলা একাডেমি আয়োজিত মেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ জানান, আজ মেলা বিকেল ৩টার পরিবর্তে সকাল ১১টায় শুরু হবে এবং চলবে একটানা রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।
প্রকাশকদের দাবির মুখে সমাপনী দিনে মেলা চার ঘণ্টা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে যেসব পাঠক এখনও মেলায় আসতে পারেননি, তাঁরা চার ঘণ্টা সময় বেশি পাবেন।
আজ একাডেমির মূল মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. ইব্রাহীম হোসেন খান। সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। গ্রন্থমেলার প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন গ্রন্থমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ।
মেলা চত্বর ঘুরে সোমবার দেখা গেছে, বড় প্রকাশনা সংস্থার স্টলগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। পছন্দের বইটি কিনতে সবাই ব্যস্ত। যারা মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাচ্ছেন, তাদের সবার হাতেই বইয়ের ব্যাগ।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্ণধার আরিফুর রহমান নাঈম জানান, এবার বিক্রি গতবছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। শেষদিন বেশ ভাল বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
বিকেলে গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশের প্রকাশনা : গ্রন্থ পরিকল্পনা ও সম্পাদনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারিক সুজাত। আলোচনায় অংশ নেন মফিদুল হক, বদিউদ্দিন নাজির এবং খান মাহবুব।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ভালোমানের বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনার জগতে দক্ষ জনশক্তি ও অধিক বিনিয়োগ দুটিই প্রয়োজন। সেইসঙ্গে জাতীয় গ্রন্থনীতি ও গ্রন্থাগারনীতি বাস্তবায়ন করাও অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল প্রবীর দত্তের নির্দেশনায় এবং গীতাঞ্জলি ললিতকলা একাডেমির পরিবেশনায় নাটক ‘মুনীর চৌধুরী’।
বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের উপর মৌলবাদী চক্রের সন্ত্রাসী হামলার ১৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে একুশে গ্রন্থমেলায় সোমবার বিকেলে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় মূল বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, সুভাষ সিংহ রায়, মারুফ রসূল, শাহাদাৎ হোসেন নিপু প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন আগামী প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী ওসমান গনি।
বক্তারা বলেন, হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার অবিলম্বে করতে হবে এবং তাঁর আদর্শে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করতে হবে।