বিশ্বব্যাংকের শুল্কমুক্ত ২ গাড়ি হস্তান্তর, বাকি ১৪টি
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক কার্যালয় শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে তাদের দুজন সাবেক কর্মকর্তার ব্যবহৃত দুটি গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে হস্তান্তর করেছে।
আজ রোববার বেলা ১১টায় বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক কার্যালয় থেকে গাড়ি দুটি শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে গাড়ি দুটি আজ সকালে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গাড়ি দুটি বর্তমানে শুল্ক গোয়েন্দার সদর দপ্তরের হেফাজতে রয়েছে।
কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে গাড়ি দুটির বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান ড. মইনুল।
শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গাড়ি দুটির ব্যবহারকারী ছিলেন ফিনল্যান্ডের নাগরিক মির্ভা তুলিয়া এবং ভারতীয় মৃদুলা সিং। মির্ভা তুলিয়া ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কমিউনিকেশনস স্পেশালিস্ট হিসেবে এবং মৃদুলা সিং ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বাংলাদেশে অবস্থানকালীন তাঁরা ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই গাড়ি দুটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় ক্রয় করেন।
মির্ভা তুলিয়ার (কাস্টমস পাসবুক নম্বর ৭১/২০১১) ব্যবহৃত টয়োটা আরএভি-৪ মড়েলে গাড়ির নিবন্ধন নম্বর : এজেবি-০৭১ এবং মৃদুলা সিং (কাস্টমস পাসবুক নম্বর ৩৩/২০১৩) ব্যবহৃত টয়োটা প্রিমো মডেলের গাড়ির নিবন্ধন নম্বর : এজেবি-০০৯২।
মির্ভা তুলিয়া ২০১৬ সালের ডিসেম্বর এবং মৃদুলা সিং ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে তাঁদের অ্যাসাইনমন্টে শেষ করে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
মইনুল খান বলেন, আইনানুযায়ী তাঁরা বাংলাদেশ ত্যাগের আগে তাঁদের ব্যবহৃত কাস্টমস পাসবুক ও তাঁদের ব্যবহৃত গাড়ি দুটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে যাননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংক বরাবর এ ধরনের ১৬টি গাড়ির তথ্য চেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি চিঠি দেওয়া হয়। মনে করছি, সেই চিঠি পেয়ে প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কান্ট্রি ডিরেক্টর দুটি গাড়ি হস্তান্তর করেছেন।
নিয়ম অনুযায়ী যেসব দাতা সংস্থা বা বিদেশি নাগরিক শুল্কমুক্ত গাড়ি ব্যবহার করবেন, তাঁরা তাঁদের কাজ শেষ হওয়ার আগে তা শুল্ক কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। অথবা এই গাড়িগুলো একই মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করতে পারেন। অথবা শুল্ক কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে নিলামও করতে পারবেন। তবে এসব ক্ষেত্রে শুল্ক কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। এ ছাড়া দেশীয় কারো কাছে বিক্রি করলে শুল্ক কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে এবং শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হবে। এই গাড়ি দুটির ক্ষেত্রে এসব নিয়ম মানা হয়নি।
এদিকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ব্যবহার করা ১৬টি গাড়ির বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিশ্বব্যাংক আবাসিক কার্যালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।