শ্রমিকনেতা হাফিজুরকে সহযোদ্ধাদের শেষ শ্রদ্ধা
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রমিকনেতা কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ।
শ্রমিকনেতা হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহে আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা হয়। সেখানেই শ্রদ্ধা জানান তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সহযোদ্ধারা।
হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া গতকাল রোববার বেলা পৌনে ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ওয়ার্কার্স পার্টির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, দুই পুত্র, পুত্রবধূ, জামাতা ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তিনি ভারতের নয়াদিল্লির বিএলকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে আসা হয়।
হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার প্রথম জানাজা আজ দুপুর ১২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচা হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতারা এবং প্রয়াত কমরেডের পরিবারের সদস্যরা।
সকালে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির তরফ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পার্টির সভাপতি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, পলিটব্যুরো সদস্য নুরুল হাসান, মাহমুদুল হাসান মানিক, ড. সুশান্ত দাস, ইকবাল কবির জাহিদ, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, কামরুল আহসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান, করম আলী, তপন দত্ত, আনোয়ারুল হক বাবলু, কেন্দ্রীয় কমিটির বিকল্প সদস্য আকছির এম চৌধুরী, আমিরুল হক আমিন, জাকির হোসেন, বজলুর রহমান, জোবায়দা পারভীন, আব্দুল মজিদ, জাকির হোসেন রাজু, মোস্তফা আলমগীর রতন, সাব্বাহ আলী খান কলিন্স প্রমুখ।
ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদীয় দলের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফজলে হোসেন বাদশা, হাজেরা সুলতানা, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, ইয়াসিন আলী, শেখ টিপু সুলতান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামীম, আফজাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।
১৪ দলের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জোটের সমন্বয়ক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাবেক মন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ আশরাফ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ-কোরিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতি হারুনুর রশীদ।
প্রয়াত হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার সংগঠন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি কামরুল আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ ছাড়া শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, জাসদের (আম্বিয়া) সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নজরুল মজিদ বেলাল, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসিত বরণ রায়, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ ও রাজেকুজ্জামান রতন, ঐক্য ন্যাপের হারুন রশীদ ভূঁইয়া, জাসদের (ইনু) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাইমুল আহসান জুয়েল প্রমুখ।
হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় খুলনার শহিদ হাদিস পার্কে তাঁর মরদেহ রাখা হবে। সেখানে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় খালিশপুর প্লাটিনাম জুট মিল ময়দান, দুপুর ১টায় দৌলতপুর শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে ইস্টার্ন জুট মিল, ফুলতলা পার্টি কার্যালয়, ফুলতলা স্বাধীনতা চত্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ আসর ফুলতলা ডাবুর মাঠে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। পরে উপজেলা সরকারি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ সমাহিত করা হয়। আগামীকাল খুলনার সব কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।