দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, প্রত্যেক তরুণের স্বপ্ন থাকা উচিত, যে স্বপ্ন হবে দেশটাকে দুর্নীতিমুক্ত করে স্বনির্ভরভাবে গড়ে তোলা। শুধু সার্টিফিকেটের জন্য শিক্ষা গ্রহণ নয়। সঠিক জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারলে চাকরির পেছনে ঘুরতে হয় না। চাকরিই মানুষের পেছনে ঘুরে। এর জন্য দরকার দুর্নীতিমুক্ত সমাজব্যবস্থা। দুর্নীতি আমাদের জীবনকে ধ্বংস করছে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে আজ মঙ্গলবার ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে তরুণ সমাজের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।    

দুদক চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরো বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম ও কমিশনের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের দুর্নীতি প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কিত মতামতসমূহ তুলে ধরে বক্তব্য দেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পরিচালক ড. এস এম মোর্শেদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, আজকের তরুণরাই আগামীকে গড়বে। তরুণরাই দুর্নীতি প্রতিরোধে স্মার্ট তথা সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।  তিনি বলেন, আগে নিজে পরিশুদ্ধ হয়ে যা শিখেছ তা করতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার চাইতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ বেশি কার্যকরী। আর এ ক্ষেত্রে তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, তরুণদের দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতিবিরোধী ক্লাব গঠনের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক, প্রামাণ্যচিত্র, নাটক, গণস্বাক্ষর, সচেতনতামূলক মেলা, রচনা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে দুর্নীতিবিরোধী গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করে দুর্নীতিবাজদের সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা সম্ভব উল্লেখ করেন কিরণ। তিনি আরো বলেন, ছাত্র অবস্থা থেকেই অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনের মানসিকতা তৈরি করা থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে শুদ্ধ ছাত্র রাজনৈতিক চর্চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরো বলেন, রাজনীতিবিদ তথা রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সহযোগিতা করলে দুর্নীতি বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা তথা সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি।   

দুদকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ কর্মশালায় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকরা প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী।