সেলিম আল দীনের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা পারুল আর নেই
ঢাকা থিয়েটার ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের জ্যেষ্ঠ সদস্য, নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের সহধর্মিণী বেগমজাদী মেহেরুন্নেসা পারুল (৬৫) আর নেই। আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মেহেরুন্নেসা পারুলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসূফ বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়নাসহ গ্রাম থিয়েটারের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ ছাড়া বগুড়া থিয়েটারের সভাপতি এ এইচ আযম খান, কাহালু থিয়েটারের সভাপতি আবদুল হান্নান, রাজশাহী থিয়েটারের সভাপতি কামারুজ্জামান কামাল, বগুড়া কলেজ থিয়েটারের সভাপতি আমজাদ হোসেন শোভন, সোনাতলা থিয়েটারের সভাপতি নিপুণ আনোয়ার কাজল, ভোর হলো বগুড়ার সমন্বয়ক তাসলিমা বেগম, লিটল থিয়েটার বগুড়ার সংগঠক সিজুল ইসলামসহ গ্রাম থিয়েটারের নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন।
গ্রাম থিয়েটারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়লে মেহেরুন্নেসা পারুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পিত্তথলিতে পাথরের কারণে ৭ জানুয়ারি শনিবার অস্ত্রোপচার করা হয়।
তাঁর ভাই কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর থেকে আপার শরীরের অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। আজ সকাল ৮টায় আপা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
আজ বাদ আসর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মরহুমার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে তাঁর লাশ অরুণাপল্লী আবাসিক সোসাইটিতে দাফন করা হয়।
বেগম মেহেরুন্নেসা পারুল টাঙ্গাইলের করটিয়া কলোনিতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা অধ্যাপক মোকছেদ আলী খান করটিয়ার সরকারি সা’দত কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অধ্যাপনা করতেন। পরে ওই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। মা আনোয়ারা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মেহেরুন্নেসা পারুল ছিলেন প্রথম। করটিয়া বেগম রোকেয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি, আবেদা খানম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক, টাঙ্গাইল সরকারি সা’দত কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও বাংলায় বিএ এবং সবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ এবং এমএড সম্পন্ন করেন। পড়াশোনা শেষে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলায় অধ্যাপনা করতেন।
১৯৭৪ সালে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের সঙ্গে মেহেরুন্নেসা পারুলের বিয়ে হয়। তাঁদের একমাত্র সন্তান মইনুল হাসানও অকালে মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি সেলিম আল দীন মারা যান। চার বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নেন মেহেরুন্নেসা পারুল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবাসিক এলাকায় সেলিম আল দীনের জন্য বরাদ্দ করা ফ্ল্যাটেই বসবাস করতেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার শিল্পকলা একাডেমিতে আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে চারদিনব্যাপী সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব করার প্রস্তুতি নিয়েছে। বগুড়ার আদমদীঘি থিয়েটার আগামীকাল ১১ জানুয়ারি থেকে চারদিনব্যাপী স্মরণোৎসব করছে। এই উৎসব দুটি বেগমজাদী মেহেরুন্নেসা পারুলকে উৎসর্গ করা হয়েছে।